উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫/০৬/২০২৫ ১০:৪৩ এএম

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চাঁদাবাজির সময় মোহাম্মদ কাকন (২৭) নামের এক প্রতারককে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢেমুশিয়া ইউপি কার্যালয় থেকে তাকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক কানন উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কুতুবদিয়া পাড়ার জাকারিয়ার ছেলে। বহুদিন ধরে সাধারণ মানুষকে হেনস্তা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আলোচনায় থাকা কানন কখনো নিজেকে সাংবাদিক, কখনো আবার সমন্বয়ক দাবি করে এলাকায় বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আসছিলেন।

চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ রাব্বি ঈশান বলেন, পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কানন নামের এক যুবককে চাঁদাবাজির সময় আটক করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ আবু তাহের মানিক বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করছে।

আবু তাহের মানিক যুগান্তরকে বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে কানন নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে পরিষদের নারী উদ্যোক্তা আসমাউল হুসনার কক্ষে প্রবেশ করে বলেন ‘‘এখানে জনসাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে, আমি সাংবাদিক আমাকে ৫ হাজার টাকা দিন নয় তো নিউজ করে দিব’’।’

উদ্যোক্তাকে চাকরিচ্যুতি ও মানহানিকর অপপ্রচারের ভয় দেখানো হয়। গ্রাম পুলিশ, দফাদার ও অন্যান্যদেরকে বিষয়টি জানালে অভিযুক্ত কানন তখন তাদের প্রতিও অশোভন আচরণ ও হুমকি প্রদান করেন এবং সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেন। তার কথাবার্তা উপস্থিত সেবা প্রার্থীদের সন্দেহ হলে, পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সাইরাস চৌধুরী বলেন, একজন ভুয়া সমন্বয়ককে আটকের খবর শুনে সেখানে গিয়ে দেখি আটক কানন পার্শ্ববর্তী কোনাখালী এলাকার ছেলে। বিগত ৫ আগস্টের পূর্বে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করত। পরবর্তীতে বিভিন্ন পরিচয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে। কানন নিজেকে কখনো সমন্বয়ক, সাংবাদিক ও এনসিপি-এর ‘ক্রাইম রিপোর্টার’ পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করত বলে অভিযোগ রয়েছে।’

এদিকে এলাকার ভুক্তভোগীরা বলছেন, সে এলাকায় ‘ভাই ভাই সুপার পাওয়ার’ নামে একটা কিশোর গ্যাং সংগঠন গড়ে তোলে, সে ওই সংগঠনের একজন উপদেষ্টা।

সবশেষ ২৪ জুন দুপুর ১২টা ৩০মিনিটের দিকে চকরিয়ার ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদে চাঁদাবাজির চেষ্টা চালালে স্থানীয় জনগণ তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

কোনাখালী এলাকার ভুক্তভোগী ডা. আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এই কানন নামের ছেলেটা এতটাই বেপরোয়া যে, মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় হচ্ছে তার পেশা ও নেশা। তার দাবি করা চাঁদা না দেওয়ায় কিছুদিন আগে চকরিয়া আদালত চত্বরে আমার স্ত্রীকেও ফেসবুক লাইভে এসে সে অপদস্থ করেছিল। এমন কথা সে লাইভে বলেছে যা চরম পর্যায়ের অশোভন।’

এদিকে এনসিপির চকরিয়া উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধি সৈয়দ হাসান তার ফেসবুকে জানান ‘এনসিপিতে চকরিয়া উপজেলায় মো. কানন নামের কোন সমন্বয়ক বা ক্রাইম রিপোর্টার বলে কেউ নেই। কেউ এ পরিচয় দিয়ে থাকলে সে ভুয়া।’ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তিনি প্রশাসনের নিকট দাবি জানান।

চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ বলেন, তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, চাঁদাবাজি, সরকারি কাজে বাঁধা ও নারীকে হেনস্তা করার অপরাধে মামলা রুজু পূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

সাগর-নদে ভয় আরাকান আর্মি

সাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় ১১ জুন। পরদিনই কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কায়ুকখালী ...

উখিয়ায় সেনা-পুলিশের অভিযানে শীর্ষ ডাকাত শাহীনের অস্ত্র প্রশিক্ষক গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের উখিয়ায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে শীর্ষ ডাকাত শাহীন বাহিনীর অস্ত্র প্রশিক্ষক ও গানম্যান ...